Monday, August 9, 2021

ইসলামী নববর্ষের গুরত্ব ও করণীয়

আজ ইসলামী নববর্ষ বা হিজরী নববর্ষস । বাইকে হিজরী নববর্ষের শুভেচ্ছা । ১৪৪৩ হিজরীর প্রথম দিন : ১লা মহহরম।



হিজরী সন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ত্যাগ এর ঐতিহাসিক স্মারক।

হিজরী সন আমাদের মনে করিয়ে দেয় কিভাবে অবিশ্বাসীরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পৃথিবী হতে সরিয়ে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল। কিন্তু তিনি আজো জাগরূক হয়ে আছেন মুসলিম বিশ্বে।

হিজরী সনের গুরুত্ব : তফসীরে কবীর ১৬ তম ভাগ ৫৩ পৃষ্ঠায় ইমাম রাজী (রহ.) কুরআন – হাদিস সূক্ষাতিসূক্ষভাবে গবেষণা করে বলেছেন যে, মুসলিমরা তাদের যাবতীয় কাজ করবে হিজরী সন দিয়ে ।

কিছু ক্ষেত্র হিজরী সন, যেমন : রোযা, ফিৎরা, ঈদ, হজ্ব, যাকাত এবং কিছু ক্ষেত্রে, যেমন : ব্যবসা – বাণিজ্য ,ব্লগ সাইটে তারিখ লেখা, রাজনৈতিক কাজে, আইন – আদালতে,আন্তজার্তিক ক্ষেত্রে, মহাকাশ গবেষণায়, যে কোন দিবস পালন ইত্যাদি ক্ষেত্রে কাফের ও মুশরিকদের সন গ্রহণ করা আল্লাহর কাছে অগ্রহণযোগ্য । কারণ হিজরী সন মুসলিম জাতির ক্যালেন্ডার।
তাফসীর গ্রন্হগুলো আমাদের তাই বলে থাকে ।

হিজরী নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আমাদের করণীয় :

১. আত্মসমালোচনা করা : একটি বৎসরের বিদায় নিল আর নতুন আরেকটি বৎসরের আগমনের মধ্যে রয়েছে চিন্তা ভাবনার খোরাক। আত্মসমালোচনা করে দেখতে হবে, কেমন ছিল গত বৎসরে আমার আমলনামা। কী পরিমান বরকতময় আমলসমূহ করেছি তা হিসাব করতে হবে । কম হলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে ।

২.বিগত বছরে কী করা হবে তার পরিকল্পনা নেওয়া :
ক) বরকতময় আমলসমূহ করার জন্য সময় ভাগ করে নিতে হবে ।
খ) নিজের পেশাগত জীবনকে উন্নত করার জন্য পরিকল্পনা সাজাতে হবে ।

গ) আখেরাতের জন্য ভাল লোকদের খুজে বের করা : বিভিন্ন সাইট, প্রতিষ্ঠান ও নিজের পরিবেশ হতে ভাল লোকদের খুজে বের করতে হবে যারা বরকতময় আমলসমূহ করতে সাহায্য করবে , মারা গেলে দু,আ করবে এবং ইসলাম প্রচার ও প্রসারে সাহায্য করবে । এরাই মূলত বন্ধু ।

ঘ) আয় বর্ধক কাজের পরিকল্পনা নেওয়া : কলেজ ১ম বর্ষের ছাত্রটার উচিত হবে বা – মার উপর নির্ভর না থেকে আয় বর্ধক কাজ করার পরিকল্পনা নেওয়া ।

ঙ)বিভিন্ন ভাষায় দক্ষতা অর্জন : আরবী ভাষাসহ নূন্যতম অপর একটি ভাষা শিখার পরিকল্পনা নিতে হবে । কারণ মুসলিম জাতির সদস্যদের একক ভাষা আরবী এবং তারা চার হাজারেরও অধীক ভাষায় কথা বলে । মুসলিম জাতির সদস্যরা জ্ঞানী ও প্রজ্ঞাবান । এক্ষেত্রে আরবীর পাশাপাশি রাশিয়ান, ফ্রান্স, চীনা ইত্যাদির কোন একটা শিখা যেতে পারে । এক্ষেত্রে ইন্টারনেটের সাহায্য নিতে হবে ।

চ) সামাজিক কাজ করার পরিকল্পনা নিতে হবে :
পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান, মসজিদের জন্য ভাল হুজুর সংগ্রহ ,স্বাক্ষরতা অভিজান চালানো, কুরআন শেখার কোর্স পরিচালনা করা এবং আকাশ চেনা – গাছ চেনা – সাতার শেখার কাজের পরিকল্পনা নিতে হবে ।

ছ ) মহররম মাসের ৯,১০,১১ তারিখ রোজা রাখতে হবে । এভাবে প্রতি মাসের ১৩,১৪,১৫ তারিখ রোজা রাখতে হবে । প্রতি সপ্তাহে সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতে হবে । এসব আমল হাদিস দ্বারা প্রমাণিত ।

শিক্ষণীয় দিক ও করণীয় :

আল্লাহ তা’য়ালা পবিত্র কুরআনে অনেক ঐতিহাসিক ঘটনা উল্লেখ করেছেন যাতে আমরা তার পথে দাবিত হই । হযরত মূসা (আ) ও ফেরাউনের ঘটনা। সেখানে ইসলাম বিজয়ী হয়েছ ।এ ঐতিহাসিক ঘটনাটি ঘটেছিল পবিত্র মহররম মাসের ১০ তারিখে। এদিনকে বলা হয় আশুরা ।

ইসলাম ও কুফরের দ্বন্দ্ব ও সংঘাতে মুমিনের মনে আশুরার শিক্ষা সর্বদা অনুপ্রেরণার সঞ্চার করে, মিথ্যা যতই শক্তির অধিকারী হোক না কেন তার পতন অনিবার্য। আল্লাহর সাহায্যে মুমিনদের বিজয় আসে। মিথ্যা যতই শক্তির অধিকারী হোক না কেন তার বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে ।

আশুরা অর্থাৎ মহররম মাসের দশম দিবস এ কারণেই এত ফযীলতের। ইবনে আব্বাস (রা) বর্ণনা করেন, রাসূল (সা) মদীনা শরীফে হিজরত করে আসার পর দেখতে পেলেন, ইহুদীরা আশুরার দিন রোজা রাখছে। তিনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, কি কারণে তোমরা আশুরার দিবসে রোজা রাখো। তারা উত্তর দিলেন, এটা হচ্ছে একটা মহান দিন। আল্লাহ এদিন মূসা (আ) এবং তাঁর জাতিকে উদ্ধার করেছিলেন। আর ফেরাউন ও তার লোকজনকে ডুবিয়ে মেরেছিলেন। মূসা (আ) আল্লাহর শোকর আদায়ের উদ্দেশ্যে এ দিনে রোযা রাখতেন। আমরাও তাই করছি। রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, মূসা (আ) এর ব্যাপারে তোমাদের চেয়ে আমাদের হক ও করণীয় আরও বেশি। তারপর থেকে রাসূলুল্লাহ (সা) আশুরার দিবসের রোযা রাখা শুরু করলেন এবং সাহাবীদেরকেও রাখতে বললেন।-(বুখারী ও মুসলিম)

আরেকটি রেওয়াতে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সা) আশুরার রোযা রাখা শুরু করলে এবং রাখার জন্য সাহাবীদেরকে বললে অনেকেই বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ। এটা তো ইহুদী ও খৃষ্টানদের একটা পবিত্র দিন। তিনি বললেন, ‘‘আগামী বৎসর যদি বেঁচে থাকি ইনশাআল্লাহ তাহলে ৯ই মহররম ও রোযা রাখব।’’ আগামী বৎসর আসার পূর্বেই অবশ্য তিনি ওফাৎ লাভ করেন।-মুসলিম

অন্য রেওয়ায়েতে এসেছে, আশুরার আগের দিন বা পরের দিন আরেকটি রোযা রাখো। আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে এ বরকতময় আমল করার তাওফিক দিন। আমীন!

উপসংহার : উপর উল্লেখিত পদ্ধতিতে হিজরী নববর্ষের বর্ষবরণ ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গিতে আলোচনা করলাম । আমার এই নিবন্ধ অনুযায়ী আমল করে এ গুণাহগারের কিছু গোনাহ কমাতে সাহায্য করুন । আর আল্লাহ তায়ালাও আপনাদের সোয়াব দিবেন ।

আসুন ইসলামের আলোয় আলোকিত হই। নিজেকে রাঙাই আল্লাহর রঙে এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শে ।

মনে রাখা জরুরী যে, মুহাররম মাস শুধুমাত্র কারবালার ঘটনা স্মরণ করার মাসই নয় এমাস গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার, ত্যাগের, ভালো কাজ করার, খারাপ কাজ হতে বেঁচে থাকার এবং মুসলিম বিশ্বকে নতুন করে গড়ার প্রতিজ্ঞা করার মাস ।

হিজরী নববর্ষ আমাদেরকে ইসলামের ত্যাগের আদর্শের দিকেই আহবান করছে।
সবশেষে কবিকণ্ঠে বলি,
“ফিরে এলো ঐ মুহাররম মাহিনা,
ত্যাগ চাই, মর্সিয়া ক্রন্দন চাহিনা।”

শেয়ার করুন

1 comment:

  1. Borgata Hotel Casino & Spa to reopen Sept. 19 - DrmCD
    The Borgata 제주도 출장샵 Casino & Spa 여수 출장안마 will 원주 출장안마 reopen on Sept. 19, 부천 출장샵 according to an announcement 거제 출장안마 from the casino's president and general manager.

    ReplyDelete